শীতকালীন আগাম সবজি লাল শাক তুলতে ব্যস্ত কামাল হুসাইনের পরিবার।
জুয়েল হাসান:
কৃষি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। জনসংখ্যা অনুপাতে খাদ্যপণ্যের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমান। তাই শুরু হয়েছে আধুনিক কৃষি পদ্ধতির প্রয়োগ। নতুন প্রযুক্তির সংযোজন করে এক জমিতে ফলছে হরেক রকম ফল ও ফসল। এক জমিতে দুই থেকে তিনটি ফসল এখন রঙিন স্বপ্ন হয়ে উঠেছে। এক জমিতে কম খরচে ও কম সময়ে অধিক মুনাফা হওয়ায় নতুন সম্ভাবনার দেখা দিচ্ছে। একই জমিতে একই সময় দুই ফসল উৎপাদনে তাই আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। যে কোনো একটি ফসলের সঙ্গে চাষ করা হচ্ছে সময়োপযোগী আরেকটি ফসল।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বগুড়া সদরের ১৯ নং ওয়ার্ডের কুরশা উত্তর পাড়ায় কৃষক কামাল হুসাইন তার ২৩ শতাংশ জমিতে লাল শাক ও বেগুন চাষ করতে দেখা যায়। জমি তৈরি করে প্রথম দিনে লাল শাকের বিজ বপন করেন এবং পরের দিন বেগুনের চারা লাগান। লাল শাকের বিজ বপন থেকে ১৩দিন পর থেকে লাল শাক বিক্রি করতে শুরু করেন।
প্রতি কেজি৪০/৫০টাকা দরে বিক্রি করেন। এভাবে ২৫/৩০ দিনে প্রায় ৩০মন বিক্রি হবে বলে তিনি আসা করেন। বাজার ভালো হলে লালশাক থেকে তার আয় দাঁড়াবে প্রায় ৪০হাজার টাকা। তবে তার এ কাজে তার পরিবারকেও সহযোগীতা করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কৃষক কামাল হুসাইন বলেন, একই জমিতে বেগুন ও লাল শাক চাষ করেছি লাল শাকের জন্য বারতি সারের প্রয়োজন হয়না বেগুন চাষের জন্য আমার সবমিলিয় খরচ হয়েছে ৭০০০টাকা। ১৫দিন পর থেকে লালশাক বিক্রি করছি লাল শাক থেকে আমার বারতি ৪০হাজার আয় হবে। আমি অনেক খুশি। এতে করে আমার এ ধরণের ফসলের আগ্রহ বাড়ছে। লাল শাক তোলা থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি করতে সময় ও খরচ কম হয়।
তিনি আরও বলেন, তার এ ধরনের ফসল উৎপাদন দেখে তার কাছে অনেক কৃষক আসেন পরামর্শ নিতে। তবে কৃষি বিভাগের সহযোগীতা পেলে এ ধরনে ফসলের প্রতি আগ্রহ বারবে বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে এটি শীতকালীন আগাম সবজি। পৌরসভা জুড়ে প্রায় তিন হেক্ট জমিতে লাল শাক চাষ হয়েছে। শীতকালীন আগাম সবজি এবং এক সঙ্গে দুইটি ফসলে বাড়তি অর্থ উপার্জন হচ্ছে চাষিদের।
সাথী ফসল সম্পর্কে তিনি বলেন, কৃষকদের মধ্যে সাথী ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করতে আমরা সবসময় মাঠে কাজ করছি। ইতি মধ্যেই আমরা বেশকিছু প্রদর্শনীও দিয়েছি। যেমন মালটা বাগানের ভিতর আমের চাষ,পোটলের মাচার নিচে আদা চাষ। তাছাড়া সাথী ফসল হিসেবে বেগুন,লাল শাক, মুলা,বাঁধাকপি ও চাষ করছেন অনেক কৃষক।যে সকল কৃষক নিজ উদ্দ্যোগে চাষ করছেন তাদেরকে আমরা যে কোন সমস্যার পরামর্শ দিয়ে থাকি। তাই এই সাথী ফসল পদ্ধতিতে সবাই চাষ করলে তা দেশের কৃষিখাতে বিপ্লব ঘটাবে এবং আধুনিক কৃষি সফলতার নতুন মাইল ফলক স্থাপন করবে বলে তিনি মনে করেন।